বেল (Aegle Marmelos) কাঁচা হোক কিংবা পাকা দুটোই সমান উপকারী। একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং উপকারী একটি ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে শ্বেতসার, ক্যারোটিন, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ক্যালসিয়াম এবং লৌহ।
সেই প্রাচীন সময় থেকেই আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে পাকাপোক্ত জায়গা করে নিয়েছে বেল। কারন এটার আছে অনেক ঔষধি গুণ । আমরা মোটামুটি সবাই জানি কোষ্ঠকাঠিন্য ও আমাশয়ের উপকার পেতে বেল কতটা কার্যকরী।
বেলের পুষ্টি উপাদানসমূহ
দেখে নেওয়া যাক প্রতি ১০০ গ্রাম বেলে কি পরিমাণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
- ক্যারোটিন ৫৫ মিলিগ্রাম
- থায়ামিন ০.১৩ মিলিগ্রাম,
- রিভোফ্লাবিন ১.১৯ মিলিগ্রাম
- এসকরবিক এসিড ৮.৬ মিলিগ্রাম
- আয়রন ৩.২৫ মিলিগ্রাম
- নিয়াসিন ১.১ মিলিগ্রাম
- টারটারিক এসিড ২.২১ মিলিগ্রাম
- প্রোটিন
- শর্করা ২৮.১১ থেকে ৩১.৮ গ্রাম
- এছাড়াও শ্বেতসার ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্স রয়েছে।
বেলের ৬টি উপকারিতা
বেল এর উপকারিতার কথা বলতে শুরু করলে সেটি আর সহজে শেষ করা যাবে না। তবুও আমরা চেষ্টা করেছি এখানে গুটি কয়েক উপকারিতার উল্লেখ করার জন্য।
- স্মৃতিশক্তি বাড়াতেঃ ছাত্র-ছাত্রীদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে দুইবার তিনটি বেলপাতা ভেজে মচমচে করে মিছরির সাথে এক সপ্তাহ প্রতিদিন সকালে খাওয়ালে স্মৃতি শক্তি বেড়ে যায়।
- শুক্রের তারল্য বৃদ্ধিতেঃ বেল গাছের শিকর ভালো করে ধুয়ে সামান্য জিরার সাথে বেটে ঘিয়ের সাথে খেলে শুক্রের ঘনত্ব বৃদ্ধি হয়।
- পেটের অসুখেঃ অনেকের পেট ব্যথা ও পেট খারাপ থাকে প্রায় সারাবছরই। হজমের গোলযোগে পেটের ভেতর ঘর ঘর করা, ভুটভাট করা সমস্যায় তারা কাঁচা বেলের গায়ে আধা ইঞ্চি পুরু করে কাঁদা মাখিয়ে চুলায় কাঠের আগুনে পুড়িয়ে সকাল-বিকেল তিন চার চামচ বেল সামান্য গুড় বা চিনি দিয়ে তিন বা চার দিন খেলে উপকার পাবেন। কাঁচা বেলের শাস শুটকি পানিতে ভিজিয়ে সেই পানি খেলেও উপকৃত হবেন এতে পুরনো আমাশয় ভাল হয়।
- সর্দি কিংবা জ্বর জ্বর ভাব হলেঃ সর্দি হলে বা গায়ে ব্যথা জ্বর জ্বর ভাব হলে বেল পাতা বেটে রস করে এক ফোঁটা মধু সহ তিন চারদিন খেলে উপকার পাবেন।
- গায়ের দুর্গন্ধেঃ অনেকের শরীর থেকে খুব দুর্গন্ধ নির্গত হয়। এই জন্য এমনকি বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত হয়। যাদের পাশে কেউ বসতে পারে না শরীরে দুরগন্ধের কারণে তারা বেলপাতা দিয়ে পানি সেদ্ধ করে সেই পানিতে শরীর মুছলে বা সেই পানি দিয়ে গোসল করলে শরীরের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাবেন।
- ঔষধি গুণ: বেল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং আমাশয় থেকে উপকার দেয়। আধা সিদ্ধ বেল আমাশয়ে অধিক কার্যকরী। বেলের শরবত হজমশক্তি বাড়ায় এবং এটি বলবর্ধক। বেলের পাতার রস মধুর সাথে মিশিয়ে পান করলে চোখের ছানি উপশম হয়। বেল পাতার রস ও মধু গোলমরিচের গুঁড়ায় মিশিয়ে পান করলে জন্ডিস রোগ নিরাময় হয়।
যদিও বেল একটি অত্যন্ত উপকারী ফল তারপরও এর কিছু এর কিছু অপকারিতা আছে। পাকা বেল হজমে কষ্টসাধ্য দীর্ঘদিন পাকা বেল খেলে অন্ত্রে ছিদ্র তৈরি হতে পারে। কিন্তু কাচা বেল ঠিক বিপরীত কাজ করে। অর্থাৎ অন্ত্রের ছিদ্র হতে দেয় না এবং ছিদ্র হলে তা বন্ধ করায় সহায়ক হয়। তাই নিয়মিত দীর্ঘদিন পাকা বেল খাওয়া ঠিক না। বরং কাঁচা বেল পোড়া বা বেল শুটকি খেতে পারেন।
সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। আর আমাদের লেখাটি ভালো লেগে থাকলে আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন। আপনার মতামত আমাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ, তাই কমেন্ট এর মাধ্যমে আপনার মতামত জানান। ধন্যবাদ